ক্লাস নাইন ইতিহাস অ্যাসাইনমেন্ট ৩
প্রাচীন বাংলার গুরুত্বপূর্ণ রাজবংশ:
পাল রাজাদের শাসন কাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। এর আগের ইতিহাস খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। এ সময় কালে কোন শাসক দীর্ঘদিন সমগ্র বাংলার শাসন করতে পারেনি। তাই বিচ্ছিন্নভাবে বাংলার রাজনৈতিক জীবনের বিকাশ ঘটেছে। নিচে বাংলার গুরুত্বপূর্ণ রাজবংশের নাম উল্লেখ করা হলো:
এখানের রাজবংশ বলতে প্রাচীনকালের যাদের উপর বাংলার শাসনভার ন্যস্ত ছিল তাদেরকে বোঝানো হয়েছে। প্রাচীন বাংলার গুরুত্বপূর্ণ রাজবংশ হলো:
#/মৌর্য ও গুপ্ত বংশ
#/খরগ বংশ
#/সেন বংশ
#/বর্ম বংশ
#/পাল বংশ
#/দেব বংশ
#/চন্দ্র বংশ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
প্রাচীন বাংলার শাসন ব্যবস্থা:
গুপ্ত শাসন এর পূর্বে প্রাচীন বাংলার রাজ্য শাসন পদ্ধতি সম্বন্ধে সঠিক কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না। এদেশে গুপ্ত শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বে কোন সমাজ ছিল সর্ব সেরা। তখন রাজা ছিল না রাজত্ব ছিল না। তবুও শাসন পদ্ধতি সামান্য মাত্রায় ছিল। তখন মানুষ একসাথে বসবাস করত।
গুপ্তদের সময় বাংলার শাসন পদ্ধতি পরিষ্কার বিবরণ পাওয়া যায়। বাংলার যে অংশ গুপ্ত সম্রাটদের সরাসরি শাসনে ছিল না, তা মহারাজা উপাধিধারী মহা সামন্তগন আলাদাভাবে শাসন করতেন।এসব সামন্ত রাজার সব সময় গুপ্ত সম্রাট এর কর্তৃত্ব মেনে চলতেন। ধীরে ধীরে বাংলায় গুপ্ত সাম্রাজ্যের শাসন চালু হয়। এ মহা সামান দের অদিনে বহু কর্মচারী নিযুক্ত থাকতেন।
ষষ্ঠ শতকে উত্তর পশ্চিম বাংলায় গুপ্ত বংশের শাসন শেষ হয়ে যায়। তারপর প্রতিষ্ঠা পায় পাল বংশের শাসন।বঙ্গে নতুন যুগের শুরু হয়। পাল বংশের চতুর্থ শতকে রাজত্বকালে বঙ্গে তাদের শাসন ব্যবস্থার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের শাসন বিভাগের সর্বোচ্চ ছিলেন স্বয়ং রাজা। এ সময় থেকে সর্বপ্রথম একজন প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান সচিবের উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি ছিলেন সর্বপ্রধান রাজকর্মচারী। রাজ্যের সকল প্রকার শাসন কাজের জন্য যতগুলো নির্দিষ্ট শাসন বিভাগ ছিল এর প্রতিটি বিভাগের জন্য একজন অধ্যক্ষ নিযুক্ত থাকতেন। গুপ্তদের মত পালদের সময়ও সামন্ত রাজাদের উল্লেখ পাওয়া যায়।পাল রাজ্যে যে শাসন পদ্ধতি প্রচলিত হয়েছিল তার পরবর্তী সময়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশের রাজত্বকালে রাষ্ট্র শাসনের আদর্শ হিসেবে তা স্বীকৃতি লাভ করে। মোটামুটিভাবে এই ছিল প্রাচীন বাংলার শাসন পদ্ধতি।
মধ্যযুগের রাজবংশ:
মুসলমান শাসকদের শাসনের সূচনা কালকে বাংলার মধ্যযুগের শুরু বলা হয়। মুসলমানদের বঙ্গ বিজয়ের ফলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শুধু পরিবর্তন আসেনি এর ফলে বঙ্গের সমাজ ধর্ম অর্থনীতি ভাষা ও সাহিত্যে শিল্পকলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। বাংলার সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য মধ্যযুগীয় রাজবংশের ভূমিকা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বাংলার মধ্যযুগীয় রাজবংশের নাম উল্লেখ করা হলো:
#/ইলিয়াস শাহী বংশ
#/হোসেন শাহী বংশ
#/তুর্কি শাসন
#/বারো ভূঁইয়া
আরো অনেক রাজবংশ রয়েছে মধ্যযুগে যাদের অবদান অনস্বীকার্য।
মধ্য যুগের শাসন ব্যবস্থা:
বাংলায় মধ্যযুগের মুসলমান শাসনের ইতিহাসে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তুর্কি শাসনের ইতিহাস:
এ পর্বের প্রথম পর্যায়ে ছিল 1204 থেকে 1338 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তাদের কেউ ছিলেন বখতিয়ারের সহযোদ্ধা খলজি মালিক, আবার কেউ তুর্কি বংশের শাসক। মুসলিম শাসনের এর যুগ ছিল বিদ্রোহ বিশৃঙ্খলায় পূর্ণ।তাই ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারানী বাংলাদেশের নাম দিয়েছিলেন বুলগাকপুর অর্থ বিদ্রোহের নগরী।
সুলতান গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজি: বক্তিয়ার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বাংলার মুসলমান রাজ্যকে শক্তিশালী ও সু দৃঢ় করতে সুলতান গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজি সচেষ্ট হয়েছিলেন। শাসন কাজের সুবিধার জন্য তিনি রাজধানীর দেবকোট থেকে গৌর বা লখনৌতি তে স্থানান্তর করেন। রাজধানীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সু দৃঢ় করার জন্য বসনকুট নাম স্থানে একটি দুর্গ নির্মাণ করেন। বার্ষিক বন্যার হাত থেকে লখনৌতি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল কে রক্ষা করার জন্য তিনি বেশ কিছু খাল নির্মাণ করেন। ইওজ খলজির মৃত্যুর পরথেকে 1287 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত 60 বছর বাংলা দিল্লির মুসলমান শাসকদের একটি প্রদেশে পরিগণিত হয়। এসময় 15 জন শাসনকর্তা বাংলা শাসন করেন।
1247 থেকে বারোশো 51 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলা শাসন করেন জালাল উদ্দিন মাসউদ জানি। তিনি শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। পরবর্তী শাসক ছিলেন অযোধ্যার শাসনকর্তা মালিক একটি আর উদ্দিন ইউজবক। যথেষ্ট শক্তি সঞ্চয় করার পর মাসুদ জানি 1255 খ্রিস্টাব্দে মঘিসউদ্দিন উপাধি ধারণ করে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি বারো সাতান্ন খ্রিস্টাব্দের নিহত হন।
No comments
If you have any doubts. Please let me know..